
লাইন
জাতীয় সারাবাংলা বিশ্ব বিনোদন খেলা জীবনযাপন ইসলামী জীবন ভাইরাল প্রথম পৃষ্ঠা শেষ পৃষ্ঠা খবর শুভসংঘ
স্ত্রী-সন্তানদের ঠাণ্ডা মাথায় খুনের নৃশংস বর্ণনা দিলেন বাবু
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
১৬ জুলাই, ২০২২ ১৪:৪৮
স্ত্রী-সন্তানদের ঠাণ্ডা মাথায় খুনের নৃশংস বর্ণনা দিলেন বাবু
ShareTweet
শ্বশুরের কাছে টাকা চেয়ে না পাওয়ায় স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু (৩৩)। আজ শনিবার (১৬ জুলাই) সকালে নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বীথির বাবা শেখ মুজিবর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
Kalerkantho
হত্যাকাণ্ডের পর শুক্রবার মধ্যরাতে বীথির বাবা শেখ মুজিবর রহমান বাদি হয়ে আটক জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘পারিবারিকভাবে ২০১১ সালে আমার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বীথির সঙ্গে যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মশিউর বিশ্বাসের ছেলে জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিয়ে হয়। এরপর তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে জহুরুল আমার নিকট বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে সে আমার মেয়ে ও নাতিদের উপর শারীরিক নির্যাতন করত। মেয়ে ও দুই নাতির সুখের কথা চিন্তা করে ২০২১ সালের ২২ জুন এক লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করি। এরপর আরো টাকা চাইলে সাবিনা তার দুই মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (৯) ও সাফিয়া আক্তারকে (২) সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসে। পরবর্তীতে গত ১৫ জুলাই শুক্রবার সকালে জামাই জহুরুল আমার বাড়িতে আসে। আমার মেয়ে ও দুই নাতিকে সঙ্গে নিয়ে এদিন আনুমানিক সাড়ে ১১টার সময় নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা করে। পথে অভয়নগরের প্রেমবাগ ইউনিয়নের চাঁপাতলা গ্রামে নূর ইসলামের কলাগাছ বাগানের মধ্যে নিয়ে স্ত্রী ও দুই মেয়ের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায় সে। এ ব্যাপারে শুক্রবার মধ্যরাতে আমি বাদি হয়ে জামাই জহুরুলের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। আমার মেয়ে ও দুই নাতির হত্যাকারী জহুরুলের ফাঁসি দাবি করছি।’
আটক জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু স্ত্রী ও দুই মেয়েকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে কখনও টাকা-পয়সা নেইনি। স্ত্রী ও শ্বশুরের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে আমি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছি। হত্যার আগে আমি আমার স্ত্রীকে মারপিটও করেছি। নির্জন ওই কলাগাছ বাগানের সামনে পৌঁছালে আমার মনে হত্যার পরিকল্পনা আসে। প্রথমে স্ত্রীকে পরে বড় মেয়ে ও ছোট মেয়েকে হত্যা করি। এরপর এদিন বিকালে আমি নিজে স্থানীয় বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে আত্মসমর্পণ করি। আমি একজন খুনি। আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভয়নগর থানার এসআই উত্তম কুমার জানান, আটক জহুরুলকে আজ শনিবার যশোর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে তিনি স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে।
অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান কালের কণ্ঠকে জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বীথির বাবা বাদি হয়ে জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শনিবার সকালে নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের চাঁপাতলা গ্রামে নূর ইসলামের কলাগাছ বাগানের মধ্যে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু। এদিন বিকালে তিনি পুলিশের নিকট হত্যাকাণ্ডে ঘটানোর কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেন। জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর পেশায় একজিন রাজমিস্ত্রি ছিলেন