
দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসে একদিনে আরো ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট প্রাণহানি হলো ২৮ হাজার ৫৬০ জনের। ৮৬৭টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার ০৭৪টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৩৫৯ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
এর আগে গত বুধবার ও গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বরের একদিনে সর্বোচ্চ ৩৬ জনের মৃত্যু হয়।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮ লাখ ৫৩ হাজার ১৮৭ জনে। সুস্থ হয়েছেন আরো ৭ হাজার ০১৭ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯১ জন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শনাক্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকার মধ্যেই গত ২৫ জানুয়ারি ১৬ হাজার ৬৬ জন রোগী শনাক্তের খবর এসেছিল, যা মহামারির মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
আর গত ২৬ জানুয়ারি ১৫ হাজার ৫২৭ জন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আজ যদিও শনাক্ত ও শনাক্তের হার কিছুটা কম হলেও, মৃত্যু সংখ্যা ৩৬ জন। গতকাল ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশে প্রায় ৬ মাস পর নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ৩১ শতাংশ ছাড়ায় গত ১৮ জানুয়ারি। যদিও গত ২৫ জানুয়ারি থেকে শনাক্তের হার কিছুটা কমে ৩০ শতাংশের নিচে নামে।
এর আগে জানুয়ারির প্রথম দিনও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল চারশর নিচে, ৬ জানুয়ারি তা হাজার ছাড়ায়, ১৬ জানুয়ারি পেরিয়ে যায় ৫ হাজারের ঘর। এরপর মাত্র চারদিনে তা দ্বিগুণ হয়।
ওমিক্রন আতঙ্কের মধ্যে দেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে শনাক্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সংক্রমণ ঠেকাতে এরই মধ্যে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।
সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। গণপরিবহনেও অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার বাড়ছে। করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে গত বছরের মাঝামাঝি দেশে করোনায় মৃত্যু, রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার বেড়েছিল। তবে আগস্টে দেশব্যাপী করোনার গণটিকা দেয়ার পর সংক্রমণ কমতে থাকে।
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো দেশে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ধরা পড়ার খবর আসে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনার সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এই ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ২০২১ সালের ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়।
করোনার ভারতীয় ধরন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২০২১ সালের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
গত বছর জুলাই-আগস্টে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ পায়। ৫ আগস্ট ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে একদিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের ওই সময়টায় প্রতি পাঁচ দিনে মৃত্যুর তালিকায় ১ হাজার নতুন নাম যোগ হচ্ছিল। সেপ্টেম্বর থেকে সংক্রমণ কমতে শুরু করলে মৃত্যুর গ্রাফও নেমে আসে।
এবার শীতের শুরুতে ইউরোপ-আমেরিকায় নতুন করে সংক্রমণ ও মৃত্যুর বাড়ছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন দেশে।